ঢাকা শিশু হাসপাতালে শঙ্কা ও আতঙ্কে দিন কাটছে লিনা বেগমের। তার দুই মেয়ে সাওরিন ও মেহজাবিন ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি। এতদিন পাশাপাশি বেডে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু হঠাৎ ছোট মেয়ে মেহেজাবিনের পালস কমে যায়। তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে। এর মধ্যে তাদের বাবার চাকরিও নেই। অথচ দুই মেয়ের জন্য প্রতিদিন ২০ হাজার টাকার ইনজেকশন জোগাড় করতে হচ্ছে তাকে। মাকে কখনো আইসিইউতে, কখনো ওয়ার্ডে দৌড়াতে হচ্ছে। হাসপাতালে লিনা বেগমের চোখের পানি বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা এখন কতটা অসহায়। ডেঙ্গু যেন পুরো পরিবারকে এলোমেলো করে দিয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। শুধু লিনা বেগম নন, তার মতো আরও অনেক পরিবার এখন ডেঙ্গুতে বিপর্যস্ত।লিনা বেগম থাকেন ঢাকার মিরপুরের ৬০ ফিটে। প্রথমে শুক্রবার রাতে ছোট মেয়ে মেহজাবিন ইসলামকে (৬) নিয়ে যান হাসপাতালে। পরদিন শনিবার রাতে বড় মেয়ে সাওরিন ইসলামকেও (১২) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ২০ ও ১৯ নম্বর বেডে পাশাপাশি ভর্তি ছিল। কিন্তু ছোট মেয়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে।এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে মা লিনা বেগম বলেন, একা কয়দিক সামলাবো। এক মেয়ে আইসিইউতে অন্য মেয়ে বেডে। আমি কি করবো, কোথায় যাবো। হাতে টাকা নাই। মেয়ের বাবার চাকরিও নাই। প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা লাগে। একটা ইনজেকশনের দাম ১০ হাজার টাকা। তিনটা ইনজেকশন দিতে হবে। এত টাকা কোথায় পাবো। তারপরও মেয়ে আমার যেন সুস্থ হয়ে ওঠে, আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি।মেয়েদের বাবা এ এইচ এম বাতেনুল ইসলাম জানান, তিনি সোয়েটার কারখানায় কাজ করতেন। তার সেই চাকরিটা নেই। ফলে আইসিসিইউর বিল পরিশোধ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা মশা থেকে বাঁচতে চাই। সরকারের কাছে আকুতি এডিস মশা থেকে আমাদের বাঁচান। আমার কিছু নাই। এই দুই মেয়েই আমার একমাত্র সম্বল। অথচ তারা এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত। ছোট মেয়ের কি হবে বলা যাচ্ছে না।
Leave a Reply