কাঁঠাল খেয়েই বেঁচে আছে শ্রীলঙ্কান লাখ লাখ মানুষ•দোহারের সংবাদ – দোহারের সংবাদ
  1. admin@doharersongbad.com : admin :
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা,নেই তামিম-দোহারের সংবাদ বান্দুরায় সড়কে চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক যুবকের কারাদণ্ড-দোহারের সংবাদ দোহারে মোটরসাইকেল চাপায় পথযাত্রী নিহত-দোহারের সংবাদ কেরানীগঞ্জে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১৫ সদস্য আটক-দোহারের সংবাদ শুক্রাণু দিলেই শিক্ষার্থীরা পাবেন লাখ টাকা-দোহারের সংবাদ ডাকাতির ফোন স্ত্রীকে উপহারই হোল কাল-দোহারের সংবাদ পানি এখনো সরেনি নিউমার্কেটের বেচাকেনা বন্ধ-দোহারের সংবাদ নারীরা কি জুমার জামাতে শরিক হতে পারবেন? দোহারের সংবাদ সাপে কাটার পর জীবিত সাপ নিয়ে হাসপাতালে হাজির রোগী-দোহারের সংবাদ কোনোটাই আমার নেই চিরকুট লিখে কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা-দোহারের সংবাদ

কাঁঠাল খেয়েই বেঁচে আছে শ্রীলঙ্কান লাখ লাখ মানুষ•দোহারের সংবাদ

দোহারের সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
  • ৭৫ বার পঠিত

এক বছর আগে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষের মুখে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি এখন দারিদ্র্যে ধুঁকছে। খাবার জোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির বড় একটি জনগোষ্ঠী। তিন সন্তানের পিতা দিনমজুর কারুপ্পাইয়া কুমার বলেন, কাঁঠাল খেয়ে আমরা লাখ লাখ মানুষ প্রাণে বেঁচে আছি। অনাহারের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে এই কাঁঠাল।

একসময় ফল হিসেবে সবচেয়ে অবজ্ঞা করা হতো যে কাঁঠালকে সেটাই এখন মানুষের প্রাণ রক্ষাকারী খাবারে পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রায় এক ডলার সমমূল্যে ১৫ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী এই দিনমজুর বলেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটের আগে প্রতিটি মানুষের ভাত বা পাউরুটি কেনার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু এখন খাবারের দাম এতটাই নাগালের বাইরে চলে গেছে যে বহু মানুষ প্রায় প্রতিদিন কাঁঠাল খেয়ে বেঁচে আছে।শ্রীলঙ্কার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে রয়েছে। এখন প্রতি দুটি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারকে বাধ্য হয়ে তাদের আয়ের ৭০ শতাংশের বেশি খাবার-দাবারের জন্য ব্যয় করতে হচ্ছে।

নাদিকা পেরেরা নামে তিন সন্তানের এক জননী বলেন, আগে আমরা তিন বেলা খেতাম। এখন খাচ্ছি দুবেলা। ১২ কেজি ওজনের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম গত বছর পর্যন্ত ছিল ৫ ডলার। চোখ মুছতে মুছতে তিনি বলেন, সিলিন্ডারের দাম এখন দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। ফলে এখন বাধ্য হয়ে পুরোনো পদ্ধতিতে চুলা জ্বালিয়ে রাঁধতে হচ্ছে। নারকেলের খোলা দিয়ে চুলায় আগুন জ্বালাচ্ছিলেন তিনি। ফলে চোখ জ্বালা করা বিষাক্ত ধোঁয়া তার চারপাশে ছড়িয়ে আছে।শ্রীলঙ্কা তার ইতিহাসে সবচেয়ে নজিরবিহীন গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে ২০২২ সালে। দেশটির অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ায় এরপর থেকে মানুষের আয় সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে এবং খাদ্যদ্রব্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। সঙ্কটে বিপর্যস্ত দেশটিতে বিরামহীন বিদ্যুতের অভাব আর জ্বালানির মজুত ফুরিয়ে আসায় তীব্র জনরোষ সৃষ্টি হয়। এর তার জেরে গত বছরের ৯ জুলাই জনগণ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সরকারি বাসভবনে চড়াও হয়। তীব্র ক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন রাজাপাকসে।দেশটির মুদ্রাস্ফীতি গত জুন মাসে ১২ শতাংশে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৫৪ শতাংশ। তারপরেও পরিবারগুলোর আয় কমে যাওয়ায় মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। কারুপ্পাইয়া কুমারের স্ত্রী রাবার চাষের কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন। কিন্তু বর্ষার মৌসুমে তিনি কাজ করতে পারেন না। রাবার গাছের কাণ্ডে খাঁজ কাটার কাজ করেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে আসা রাবার সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বর্ষার মৌসুম সে কাজ এখন বন্ধ। ফলে এ সময়টায় কারুপ্পাইয়া কুমারের একাই সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়।

কারুপ্পাইয়া কুমার জীবিকার তাগিদে নারিকেল গাছে উঠে নারিকেল পাড়েন। প্রতিবার ওঠায় তার আয় হয় ২০০ শ্রীলঙ্কান রুপি (৬৫ সেন্টের সম পরিমাণ)। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচও টানতে হয়। কাজেই খাবার কেনার জন্য খুব কম পয়সা হাতে থাকে।

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেহেলিয়া রাম্বুওয়েলা ইতোমধ্যেই মানুষজনকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে চড়া দাম এবং ঘাটতি থেকে ‌অবিলম্বেই পুরো পরিত্রাণের কোনো সম্ভাবনা নেই।তিনি বলেন, ভেবে দেখুন আমাদের যে স্বল্প পরিমাণ সঞ্চিত মুদ্রা আছে তা দিয়ে আমরা কী আমদানি করবো সেই কঠিন সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হচ্ছে- খাদ্যদ্রব্য নাকি ওষুধ? অনাহারে থাকার সঙ্কট এড়াতে আমাদের তো খাবার আমদানি করতে হবে। তবে পায়ের তলায় এখন কিছুটা মাটি তৈরি হয়েছে এবং পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা