মোখার তাণ্ডব সেন্টমার্টিনে ১২৫০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ভেঙে গেছে ৪ শতাধিক নারকেলগাছ-দোহারের সংবাদ – দোহারের সংবাদ
  1. admin@doharersongbad.com : admin :
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০২:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

মোখার তাণ্ডব সেন্টমার্টিনে ১২৫০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ভেঙে গেছে ৪ শতাধিক নারকেলগাছ-দোহারের সংবাদ

দোহারের সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩
  • ১৬৬ বার পঠিত

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্রায় আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপে রোববার (১৪ মে) দুপুর দুইটা থেকে বিকেল সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে মোখা। এতে অন্তত হাজারেরও বেশি কাঁচা ও টিনের আধাপাকা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে অন্তত চার শতাধিক নারকেলগাছসহ অন্তত কয়েক হাজার গাছগাছালির ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপটির উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগে দ্বীপের তিনটি সাইক্লোন শেল্টার ও চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টি হোটেল-রিসোর্ট-কটেজে স্থানীয় প্রায় সাত হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে আনা হয়েছিল। যাদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থামার পর অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়িতে ফিরে যান। তবে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলোর সদস্যরা স্বজনদের কাছে বা আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।মোখার তাণ্ডবকে ১৯৯১ সালের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে শক্তিশালী দাবি করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মোখা যখন দ্বীপ অতিক্রম করছিল, তখন সাগরে ভাটা চলছে। জোয়ারের উচ্চতাও কম ছিল। ভরা জোয়ার থাকলে ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার গতির মোখা ভিন্ন এক পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারতো।

চেয়ারম্যান মুজিব বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার ভয়াবহতা নিয়ে শুরু থেকে প্রচারণা চালানোয় দ্বীপের বাসিন্দারা আতঙ্কে ছিলেন। ব্যাপক প্রচারণার ফলে দ্বীপের প্রায় সাত হাজার বাসিন্দা আগেভাগে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন। গত কয়েক দশকের একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে এত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে দেখিনি। আগেই নিরাপদে থাকায় তাণ্ডবে প্রাণহানি ঘটেনি।ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান মুজিব বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি দ্বীপে, সেন্টমার্টিনে প্রায় সাড়ে ৯০০ কাঁচা ঘরবাড়ি ও ৩ শতাধিক টিনের আধাপাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে সাতশটি কাঁচা ও ৩৫-৪০টি টিনের ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। পুরো দ্বীপে চার শতাধিক নারকেলগাছ উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার গাছগাছালি ও কয়েক কিলোমিটার রাস্তা।ঘূর্ণিঝড়ে, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ সদর, পৌর এলাকা, সাবরাং, ডেইলপাড়া, জাদিমুড়া, কোনারপাড়া ও গলাচিপা, বাহারছরা, হোয়াইক্যং, শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় প্রচুর গাছপালা এবং ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। উড়ে গেছে ঘরের চাল। এসব এলাকার মানুষকে সড়ক থেকে গাছ সরাতে দেখা গেছে।ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, জেলার ৫৭টি ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভা দুর্যোগকবলিত হয়েছে। এসব এলাকার ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ মানুষের ১০ হাজার ৬৬৯ ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ২২টি ঘর। সবচেয়ে বশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিন। এ দ্বীপের প্রায় এক হাজার ২৫০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুরো জেলায় ২ লাখ ৩৭ হাজার ২৪১ জন উপকূলবাসী জরুরি আশ্রয়ে শেল্টারে যান। তাদের শুকনো ও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সতর্ক সংকেত তুলে নেওয়ায় লোকজন বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরেছে। তবে, যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে ঘর মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা