এ জন ডি মারিয়া – দোহারের সংবাদ – দোহারের সংবাদ
  1. admin@doharersongbad.com : admin :
শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
অপারেশনের পর পেট থেকে বেরোলো স্ক্রু,হেডফোন-দোহারের সংবাদ শেখ হাসিনার অধিনেই নির্বাচন হবে, সালমান এফ রহমান-দোহারের সংবাদ জয়পাড়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, নয় প্রতিষ্ঠানকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা-দোহারের সংবাদ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা,নেই তামিম-দোহারের সংবাদ বান্দুরায় সড়কে চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক যুবকের কারাদণ্ড-দোহারের সংবাদ দোহারে মোটরসাইকেল চাপায় পথযাত্রী নিহত-দোহারের সংবাদ কেরানীগঞ্জে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১৫ সদস্য আটক-দোহারের সংবাদ শুক্রাণু দিলেই শিক্ষার্থীরা পাবেন লাখ টাকা-দোহারের সংবাদ ডাকাতির ফোন স্ত্রীকে উপহারই হোল কাল-দোহারের সংবাদ পানি এখনো সরেনি নিউমার্কেটের বেচাকেনা বন্ধ-দোহারের সংবাদ

এ জন ডি মারিয়া – দোহারের সংবাদ

দোহারের সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২৪৯ বার পঠিত

২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের কথা নিশ্চই মনে আছে আর্জেন্টিনার ভক্তদের। জার্মানির বিপক্ষে সেই ম্যাচটি ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ডাগআউটে বসে দেখেছেন ১১৩ মিনিটে গোল খেয়ে বেদনাদায়ক এক পরাজয়। আর্জেন্টিনার ভক্ততা সেই ম্যাচে ডি মারিয়াকে কতটা মিস করেছিলো সেটা শুধু তারাই জানে।

সাত বছর পর আবারও ব্রাজিলের মাটিতে কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেললো আর্জেন্টিনা। এবার আর বাইরে থাকতে হয়নি ডি মারিয়াকে। পুরো টুর্নামেন্টে তান্ডব চালানো ডি মারিয়াকে ফাইনালে শুরুর একাদশে জায়গা দিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। আর তাতেই নাজিমাত!

ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করে বসলেন তিনি আর আর্জেন্টিনার সাথে নিজেও পেলেন শিরোপার স্বাদ। এই গোলের সুবাদে ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টিনা দলের এই বিষ্ময় ফুটবলার দু-পায়েই সমান ভাবে দক্ষ। লেফট উইং রাইট উইং এটাকিং মিডে সমান ভাবে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। আর্জেন্টিনা দলের অন্যতম এই ফুটবলারের জীবনী নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন। ডি মারিয়ার পুরো নাম ‘আনহেল ফাবিয়ান দি মারিয়া’ । তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ সালে আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের রোজারিও শহরে এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার বেড়ে উঠা পাড্রিয়েল শহরে। মা ডায়ানা হার্নান্দেজ এবং পিতা মিগুয়েল ডি মারিয়াদের তিন সন্তানের মধ্যে একজন তিনি। তার বাবা-মা সেখানে স্থানীয় একটি কয়লা কারখানায় কাজ করতেন।

জন্মের পর থেকে ডি মারিয়া অস্বাভাবিক দুরর্ন্ত ছিলেন। দেখতে কিছুটা রোগা পাতলা হলেও তার শারীরিক শক্তি ছিলো প্রচুর। তাই তিন বছর বয়সে একজন ডাক্তার তাকে ফুটবল খেলার জন্য পরামর্শ দেন কিছুটা শান্ত হওয়ার জন্য। সেই থেকেই তিনি ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। পরিবারের খুব স্বল্প উপার্জনের কারনে ডি মারিয়ার শখকে সামলে রাখা তার বাবা-মার পক্ষে কঠিন ছিল। তিনি ফুটবল খেলেও তাঁর বাবা-মাকে কয়লা কারখানায় তাদের কাজ করতে সহায়তা করতেন। এমনকি দি মারিয়াকে এক জোড়া বুট জুতো কিনে দেয়া তার পরিবারের পক্ষে কঠিন ছিলো।৪ বছর বয়সেই তিনি লোকাল ক্লাব টোরিতোতে প্রেক্টিস শুরু করেন। ৭ বছর বয়সে তিনি রোজারিও সেন্ট্রাল একাডেমিতে যোগ দেন। তারপর ১৩ বছর বয়সে যোগ দেন রোজারিও সেন্ট্রালের ইউথ ক্লাবে। ১৭ বছর বয়সে অর্থাৎ ২০০৫ সালে রোজারিও সেন্ট্রালে অভিষেকের মাধ্যমে দি মারিয়া আর্জেন্টিনা প্রিমিয়ার ডিভিশনে তার পেশাদারী ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন।

২০০৭ সালে তিনি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব রুবিন কাজানে খেলার সুযোগ পান। প্রথম রাজি হলেও, পরে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে দূর্দান্ত নৈপূন্যের কারণে তিনি বিভিন্ন ইউরোপীয় দলের নজরে আসেন। তখন তাকে ৬মিলিয়ন ইউরোর বিনিমনে কিনে নেয় পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে বেনফিকাতে যোগ দেন দি মারিয়া। এখানে তিনি একজন উইংগার হিসেবে খেলেন। খুব দ্রুতই তিনি তার সামর্থের জানান দেন। ২০০৯ সালের অক্টোবরে, দি মারিয়া বেনফিকার সাথে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নতুন করে চুক্তি সাক্ষর করেন। চুক্তিতে তার মূল্য রাখা হয় ৪০ মিলিয়ন ইউরো। এর কয়েকদিন পর দিয়েগো মারাদোনা তাকে আর্জেন্টিনার পরবর্তী সুপারস্টার বলে ঘোষণা করেন।২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, লেইক্সোস এসসি এর বিপক্ষে দি মারিয়া তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন। এই হ্যাট্রিক করে ডি মারিয়া স্পেনিশ জায়েন্ট রিয়াল মাদ্রিদের নজরে চলে আসেন। ২০১০-২০১১ মৌসুমটা রিয়াল মাদ্রিদে ডি মারিয়ার জন্য ছিলো দুর্দান্ত।

২০১০ এর ৪ আগস্ট, ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে তার অভিষেক হয়। তারপর ২৯ আগস্ট, মায়োর্কার বিপক্ষে তার লা লিগায় অভিষেক হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর, সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলায় তিনি লীগে তার প্রথম গোল করেন। এর দশ দিন পর চ্যাম্পিয়নস লীগে অক্সারের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার একমাত্র গোলটি করেন দি মারিয়া। তারপর তার নৈপুণ্য আর পায়ের জাদুতে একের পর এক গোল এবং এসিস্ট করতে থাকেন। চ্যাম্পিয়নস লীগের রাউন্ড অব ১৬ এর দ্বিতীয় লেগের খেলায় অলিম্পিক লিওনাইসের বিপক্ষে দি মারিয়া একটি গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত রিয়াল মাদ্রিদ কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছায়। ২০১১–১২ মৌসুমের প্রথম দিক দি মারিয়ার খুব একটা ভাল যায়নি। গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর লীগের দ্রুততার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে কাকা এবং ওজিলের চেয়ে তিনিই ছিলেন জোসে মরিনহোর প্রথম পছন্দ।

এই সিজনের প্রহমার্ধটা ভালো না গেলেও শেষার্ধটা ছিলো দুর্দান্ত। ফলস্বরূপ রিয়াল মাদ্রিদ জয় করে নেয় লা-লিগার শিরোপা। ২৬ আগস্ট ২০১৪ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডি মারিয়াকে সেই সময়ের পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি প্রায় ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে ৫ বছরের জন্য তাদের দলে ভেরায়। এটি ছিলো এই ক্লাবের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি। সেই সাথে ডি মারিয়ে হয়ে গেলেন সবচেয়ে দামি ফুটবলার। দলে যোগ দিয়েই তিনি দলের ৭ নাম্বার জার্সিটি গায়ে জড়ান। যেটি ইউনাইটেডের সবচেয়ে মূল্যবান প্লেয়ারদের গায়ে ছিলো। ইউনাইটেডে এসেই প্রথম মাসেই প্লেয়ার অফ দা মান্থ নির্বাচিত হন।ইংল্যান্ডে ত্যাগ করেই তিনি যোগ দেন আরেক ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মানে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে পি এস জি তাকে ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ৮ বছরের জন্য তাদের ক্লাবে চুক্তি করায়। প্রথম সিজনেই লীগ ওয়ানে রেকর্ড ভেঙ্গে ফেললেন। এক মৌসুমে ৪৭টি ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ১৮ টি এসিস্ট করে তিনি লীগের সর্বোচ্চ এসিস্ট দাতা হয়ে যান। সাথে ১৫ টি গোল করেন। এই বছর পি এস জি লীগ ওয়ানের শিরোপা জিতে নেয়। ডিসেম্বর ২০১৫ এর লীগ ওয়ানের প্লেয়ার অফ দ্যা মান্থ নির্বাচিত হন তিনি।

পরের মৌসুমে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ তে তিনি মোট ৪৩ টি ম্যাচ খেলে ১৪ টি গোল করেন।গত বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ সিজনটি খুব একটি ভালো যায়নি ডি মারিয়ার জন্য। তিনি ৪৫ ম্যাচে করেন ৫টি গোল। এখন পর্যন্ত তিনি পি এস জি তে ২৬৪ ম্যাচে ৮৭ টি গোল করেছেন।

জাতীয় দলের ক্যারিয়ার কেমন ছিলো।২০০৭ সালে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলে জায়গা পান দি মারিয়া। ২০০৭ দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপেও তিনি আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পান। প্রতিযোগিতায় তিনি তিনটি গোল করেন এবং আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়।

২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি, দি মারিয়া এবং তার কয়েকজন অনূর্ধ্ব ২০ সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকের দলে ডাক পান। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার অতিরিক্ত সময়ে ১০৫তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি।খেলার অতিরিক্ত সময়ে ১০৫তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।সেই শুরু তার জাতীয় দলের হয়ে খেলা। এরপর কেটেছে বহু চরাই উৎরাই। ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকায় দুটি গোল করেন। আর্জেন্টিনা এ আসরে রানার্স-আপ হয়।

আবারো তিনি ডাক পান ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে। সেমি-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে দূর থেকে এক দুর্দান্ত গোল করেন। যদিও এই ম্যাচ আর্জেন্টিনা ৪-৩ এ পরিজিত হয়ে সেমিফাইলে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে। সর্বশেষ এই বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায় দাপট দেখালোও ইঞ্জুরির কারনে পুরো ম্যাচে মাঠে থাকা হয়নি তার। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে দি মারিয়ার একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা অ্যামেরিকা ২০২১ এর চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনায় তার এমন পার্ফমেন্সে তিনি কনমেবল টীম অফ দ্যা ডিকেড এ জায়গা করে নেন। ২০২২ বিশ্বকাপে তার সাইড বেনচে বসে কাটলেও তর দল ফাইনালে উঠে গেছে। তবে ইনজুরি কাটিয়ে ফাইনালে দেখা যাবে এটাই সবার আশা। এটাই হয়তো তার শেষ বিশ্বকাপে হতে যাচ্ছে কাপেই যদি শেষ হয় মন্দ কি।

২০১১ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে দি মারিয়া তার মেয়ে বন্ধু হোর্হেলিনা কার্দোসোকে বিয়ে করেন। হোর্হেলিনা থাকেন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। তাদের ঘরে দুই জন কন্যা সন্তান রয়েছে। শুভকামনা থাকবে এই মহারতি জন্যে একজন ডি মারিয়ারা একবারই আসে।ছবি তথ্য সংগৃহীত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা