দোহারের সোহেল ও সাইদুল হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন হত্যাকারী – দোহারের সংবাদ
  1. admin@doharersongbad.com : admin :
শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
পয়সা খরচ করে চড় খেতে হয় যে রেস্তোরাঁয়-দোহারের সংবাদ সারাদেশে ৩৩৮ ওসিকে একযোগে বদলি-দোহারের সংবাদ ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টি,অব্যাহত থাকতে পারে ৮ বিভাগে-দোহারের সংবাদ বাইক চুরি ঠেকাতে কী করতে হবে, বললেন ‘চোরদের গুরু’-দোহারের সংবাদ জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘সিআইডির’ দীনেশ ফ্রেডরিক্স মারা গেছেন-দোহারের সংবাদ দু-একদিনের মধ্যে আসন ভাগাভাগির সমঝোতা:ওবায়দুল কাদের-দোহারের সংবাদ ভারতের উপকূল অতিক্রম করছে ‘মিগজাউম’ বাংলাদেশে বৃষ্টি হতে পারে-দোহারের সংবাদ সারাদেশের ৫০০ থানার ওসি বদলি হচ্ছেন-দোহারের সংবাদ প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকানো যাচ্ছে না, ৬০ প্রার্থীকে শোকজ ইসির-দোহারের সংবাদ চলন্ত ট্রেনে বিয়ে করলেন বর কনে-দোহারের সংবাদ

দোহারের সোহেল ও সাইদুল হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন হত্যাকারী

দোহারের সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৭৯ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাইদুল ও সোহেলের কী অপরাধ ছিল? তারা চাকরি চেয়েছিলেন। ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে। দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তির আশায়। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মানুষ কি না করে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে নৌপথে সমুদ্র পাড়ি দিতেও দ্বিধা করেনা। আর এই সুযোগ নেয় সমাজের কিছু নরপশু। যুব সমাজকে টার্গেট করে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতিশোধ হিসেবে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করেনা সমাজের মধ্যে ভালো মানুষের ঘাপটি মেরে থাকা ঘাতকরা। এমনই একটি নির্মম ঘটনার স্বীকার সাইদুল ইসলাম মৃধা ও সোহেল।

সাইদুল ও সোহেল দুজনে প্রতিবেশি ও ভালো বন্ধু। দরিদ্র পরিবারের সন্তান তারা। পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার জন্য সাইদুল তিন বছর কাতারে কাটান। কিন্তু সেখানেও ভাগ্যের চাকা ঘোড়াতে পারেনি। সুবিধা করতে পারেনি বলে চলে আসেন দেশে। এবার দুবাই যাওয়ার চেষ্টা সাইদুলের। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।

সাইদুলের মা রাজিয়া বেগম বলেন, চাকরির জন্য দুই বন্ধু দেখা করেন পাশের গ্রামের সাজ্জাত মোল্লার সঙ্গে। সাজ্জাত মোল্লা দুজনকেই একই এলাকার চঞ্চল মোল্লার মাওয়া বালুর ড্রেজারে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন। কয়েকদিন পর ২০২১ সালের ২০শে এপ্রিল আনুমানিক সকাল ১০ টায় সাজ্জাত মোল্লা তার মোবাইল ফোন থেকে সাইদুলকে ফোন করে জানায়, এখনই মাওয়া যেতে হবে। চঞ্চল মোল্লা তারাতারি যেতে বলেছে। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুজনেই সাজ্জাত মোল্লার সঙ্গে চঞ্চল মোল্লার কাছে যাচ্ছেন বলে সাইদুল আমাকে জানায়। তখন ছিল ঠিক রমজান মাস, প্রায় সন্ধ্যা। ইফতারির খবর নিতে আমি ছেলে সাইদুলের মোবাইলে ফোন করি। সাইদুল আমাকে জানায়, আমি সাজ্জাত কাকা ও চঞ্চল মামার সঙ্গে মাওয়াতে আছি। কাজ বুঝে নিতে রাত হবে তাই আজ আসবো না। কাল সকালে আসবো।

রাজিয়া বেগম আরও বলেন, পরের দিন সাইদুলের মোবাইলে ফোন দেই। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাই। এ ঘটনা জানিয়ে থানায় মামলা করতে যাই। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সেদিন আমার মামলা/জিডি কিছুই নেয়নি। তিনদিন পর ২৩শে এপ্রিল আবার থানায় গেলে সেদিনও মামলা না নিয়ে জিডি নেন। এভাবে চার মাসেরও বেশি সসয় পার হয়ে যায়। কিন্তু ছেলের কোনো সন্ধান নেই। অবশেষে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও দোহার আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। পরে সিআইডির মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলে আর জীবিত নেই।

মামলায় আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামি সাজ্জাত মোল্লার সঙ্গে আমার পুত্র সাইদুল মৃধার তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। সাজ্জাত মোল্লা আমার ছেলেকে বলে, সুযোগ পেলে তোকে দেখে নেব। এরপর স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন সাজ্জাত মোল্লা এবং আমার ছেলে সাইদুল মৃধার আপোষ করিয়ে দেয়। প্রতিবেশি হওয়ায় আমার ছেলে এবং সাজ্জাত মোল্লার মধ্যে ফের আন্তরিক সম্পর্ক হয়। একদিন আমার ছেলে সাইদুল করোনার কারণে বিদেশ যেতে না পারার কথা জানালে সাজ্জাত মোল্লা মাওয়াতে চঞ্চল মোল্লার ড্রেজারে চাকরি দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। এরপর পরের দিন ছেলেকে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাই। আমরা সাজ্জাত মোল্লা ও চঞ্চল মোল্লার বাসায় গিয়ে ছেলের সন্ধান জানতে চাই। তারা বলে আমরা তোমার ছেলের খবর জানিনা। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকেও তোর অন্য ছেলেদেরকে মেরে লাশ গুম করে ফেলবো।

রাজিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শ্রেষ্ঠ আহমেদ রতন বলেন, এ ঘটনায় রাজিয়া বেগম প্রথমে দোহার থানায় মামলা করতে যায় কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সেদিন মামলা না নিয়ে দুই দিন পর জিডি নেন। পরে ছেলের সন্ধান না পেয়ে মা আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দেন। দোহার থানা মামলাটি গ্রহণ করে কিছুদিন তদন্ত কার্যক্রম করেন। তথ্য প্রযুক্তির বিষয় জড়িত থাকায় পরে দোহার থানা মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করেন। সিআইডির তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায়ে এ ঘটনায় সোহাগ ব্যাপারী ও ইয়াছিন মোল্লাকে আটক করে সিআইডি। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবান্বন্দী দেন। বেড়িয়ে আসে সাইদুল ও সোহেলকে নির্মমভাবে হত্যা করার আদ্যপ্রান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা